ব্যথার অ্যাবস্ট্রাক্ট | সোম




                মরে গিয়ে অদ্ভূত হবো | সোম সরকার


[চিত্রণ: হ্যারি ওয়েইস্‌বার্ড, ইউ.এস.]


কাকে বলবো যে মরে গিয়ে অদ্ভূত হবো?
অদ্ভূত হওয়া এমন কিছু আহামরি বাহাদুরি নয় যে বললে পিঠচাপড়ানি পাবো। তবে এটা সত্যি যে পিঠে কেউ হাত বুলিয়ে দেয় নি বহুবছর। তার সাথে চাপড়াচাপড়িও ভয়ানক মিস্ করছি। লাস্ট যেদিন পিঠে স্নেহের হাত অথবা ‘সাবাশ’ পড়েছিলো সেদিনেও আমার বোধ জাগে নি। যবে বোধজাগরণ শুরু হয়েছে, তখন থেকেই ক্রমশ ‘দুর্বোধ্য’ হয়ে যাচ্ছি সবার কাছে। পিঠখানি সেই সুবাদে খাঁ খাঁ করছে। খরা চলছে পিঠজুড়ে।
স্নানের পর কঠিনতম কাজ হলো নিজে নিজের পিঠ মোছা। জামা পরার আগে জামার পিঠের দিকটা বডি-স্প্রে করি যাতে কেউ আমার পেছন থেকে এসে চমকে দিতে পারে তার নরম দুটি বুক রামসে ঠেকিয়ে আর চোখদুটো হাত দিয়ে চেপে ধরে বলো তো কে আমি?। ছেলেবন্ধু হলেও আমার পিঠের মানচিত্র পাল্টে যাবে না। কিন্তু বহুদিন হলো কেউ আসেনি এভাবে চমকে দিতে। বাড়ি ফিরে আলমারির বড় আয়না আর হাতের ছোটো আয়না মিলে নিজের পিঠ ঘুরেফিরে দেখে নিই কোথাও অচেনা নদী বইছে কিনা?
ফোটোজেনিক সব পিঠখোলা ব্লাউজ। মাঝবরাবর সুগভীর খাঁজ আর উপরের দিকে মাত্র একটা ফিতে বাঁধা এমন পিঠ যার তাকে আমার ওভারস্মার্ট লাগে ব্যাকলেসনেস নিয়ে আত্মখিল্লি করার জন্যে। প্রাণখোলা হাসির চেয়েও যেন অনেক দামী এইসব হা-হা-হা করে হেসে ওঠা খোলাপিঠ। এরকম একটা প্রিন্টেড ফটো হাতে পেয়ে চুপিচুপি উল্টে দেখি। কেমন যেন সাদাটে এদের বুক। ভাবি ফ্রন্টলেস ব্লাউজের সাজেশন দিলে আমার পিঠে আদৌ এই অসভ্য ছেলে কোথাকার চাপড় পড়তো? লজ্জানিরোধক চড় আবশ্যিক হলেও আমার পিঠ আমার গালদুটোর কাছে কখনোই যেতে পারবে না।
আমার সর্বকালীন প্রিয় কমেডিয়ান সন্তোষ দত্তের উটে চড়ার সেই মজার দৃশ্য দেখে উটের পিঠকে ভালোবেসেছি। হাতির পিঠে চড়ার প্রথম অভিজ্ঞতা অ্যানিমাল প্ল্যানেট চ্যানেলে দেখে অর্জন করেছি। রাজা বিক্রমাদিত্যের পিঠ কতবার বেতালের রোমশ সাদা ভূতুড়ে বুকের সাথে যোগাযোগ করেছে তার হিসেব মনে নেই। আর আমার পিঠের কোনো বর্ণনা আজও দেয়নি আমার বৌ আর ছেলে। বরং নিজে নিজে তুলনা করি এই ভেবে - বিয়ের আগে প্রেম চলাকালীন বেশ কয়েকবার বিক্রমাদিত্য হয়েছিলাম আর বিয়ের পরে ছেলের সাথে খেলতে খেলতে এখনো উট কিম্বা হাতি হয়ে যাই।
এখন সবাই মনেপ্রাণে পিওর নিউক্লিয়ার, অথচ ফেসবুকচত্বরে যৌথভাবে থাকতে কারো আপত্তি নেই। পিঠোপিঠি ভাইবোনের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, তাতে আবিষ্কার করে ফেলি ব্লক মানে বন্ধুর পিঠ যেটাকে আর ঘোরানো যায় না। তার চেয়ে বরং বাস্তব বলে সয়ে নিই পিঠের পুরোনো আঁচড়কাটা দাগ। মাঝেমাঝে পিঠের ব্যথা মনে করিয়ে দেয় যে জীবনমৃত্যুর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মেয়াদ কমতে থাকে।
কিন্তু কাকে জানাবো মরে গিয়ে অদ্ভূত হবার এই সুপ্ত বাসনার কথা?



আড্ডা, সাবেকী ভাষায় Interview



আমার জীবন থেকে উঠে আসা সুর


এখনো অ্যানাউন্সমেন্ট হয় নাই, আসবে কি না জানা নাই

Comments