কী-ওয়ার্ডে ব্যথা | সুবীর




                   ব্যথা দাও হে অতীত | সুবীর বোস


[দেওয়াল চিত্রণ: অ্যানেলি ভ্যান বিয়েসবার্গ, নেদারল্যান্ড]

দমদমে প্রচুর ভালো-ভালো স্কুল আছে (আজও), আছে গোটা দুয়েক কলেজ, যার একটা আবার মেয়েদেরমেয়েদের কলেজ থাকা মানে, ফুচকাওয়ালা, মানে টেলিফোন বুথ, মানে আমাদের মতো স্কুল পেরনো ছেলেদের জমায়েআমার বন্ধু শম্ভু এক গরিবের মাধুরী দীক্ষিত’-কে দেখে তখন ফিদা। ঠিক হলো আমি আর শম্ভু একদিন সেই ‘দীক্ষিত’-কে রাস্তায় ধরে শম্ভুর মনের কথা উগড়ে দেব। তো, ধরা হল তাকে। বেশ আমতা আমতা করে, মাথা চুলকিয়ে তাকে বললাম, দেখো, এই আমার বন্ধু শম্ভু, ও তোমাকে...। কথা শেষ হবার আগেই, উলটো দিক থেকে প্রশ্ন, কোথায় তোমার বন্ধু? পাশ ফিরে দেখলাম, শম্ভু নেই, আমাকে একা ফেলে পালিয়েছে। 
সেবার শম্ভু প্রায় নিরুদ্দেশ হলেও ও নিজে এবং আমার অন্যান্য বন্ধুরা বিশ্বাস করত যে লেখালিখিতে আমার এলেম আছে। তাই সবার চিঠি-পত্র (পড়ুন প্রেমপত্র) লেখার দায়িত্ব যথারীতি আমার কাঁধেই ছিলউফ! কী সব কাব্য! আমি লিখে চলেছি, “ন্যায় অন্যায় জানিনে জানিনে জানিনে...শুধু তোমারে জানি, তোমারে জানি, ওগো সুন্দরী”, বা “তোমার ওই রূপের বহ্নিশিখায় আমার প্রজাপতি মন পুড়ে মরতে চায়”...ভাবা যায়! কী আবেগ!
বকলমে ওইসব চিঠি লিখতে গিয়ে কি কখনও কখনও নিজেকেই রাজার পাঠ দিয়ে ফেলেছিলাম? ঠিক মনে নেই, তবে এটুকু মনে আছে পরবর্তীকালে- আমি ততদিনে আমার ডোভার লেন পেয়ে গেছি। সে সময়ই সম্ভবত অল্পবয়েসী আবেগে, আমার বেতালা মাড়োয়া-বেহাগে আপ্লুত এক ষোড়শী আমাকে সুনামির গল্প শোনাতে চেয়েছিল খুব গভীর ভাবে। আমারও তখন বয়স কম, আবেগ বেশী। ফলে তার নীল-সাদা চত্বরে আমি যেতে পারছি না জানিয়ে দু’কলম লিখে দিলাম, এদিকে হাওয়া নেই তাই মাস্তুল অচল। তুমি জানো, আমি জানি– সব ফুল সমান গন্ধ দেয় না, সব গান সবাইকে মুগ্ধ করে করে না আর সব রঙ সবাইকে করে না রঙন। তবু ফুলের তুলনা ফুল আর রঙ সে তো জীবনেরই খেয়া। তাই আমাকে ভুলে যেও এ কথা বলছি না– বরং বলি, এভাবে আয়নাতে খুঁজো না আমাকে...ইত্যাদি...।
দিন দুয়েক পরেই আমাকে অবাক করে ও দিক থেকে প্রশ্রয়ী উত্তর এল, তুমি কী সুন্দর চিঠি লেখ। আরও বড় কিছু লেখ না কেন?
আমার সামান্য লেখালিখির প্রথম অনুপ্রেরণা সেই মেয়ে আজ কোথায়...
---

 


আড্ডা, সাবেকী ভাষায় Interview



আমার জীবন থেকে উঠে আসা সুর


এখনো অ্যানাউন্সমেন্ট হয় নাই, আসবে কি না জানা নাই

Comments