আমার জীবন থেকে উঠে আসা সুর | সুমন




                           পদুর ব্যাথা | সুমন সরকার


[আলোকচিত্র: কে তুলেছে না জানলেও চলবে]

আপনি কি ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন? উঠতে গেলে ব্যথা, বসতে গেলে ব্যথাচলে আসুন আমাদের প্রচার গাড়িতেঅবনী ঘোষের ডবল অ্যাকশন বিদ্যুত বাম...”- মফস্বলের অলি-গলিতে সন্ধ্যে নামার পর, যখন ঘরে ঘরে শাঁখ বেজে ওঠে, আসন্ন কোনও অপঘাত কল্পনা করে কেঁদে ওঠে পাড়ার নেড়ি ভুলুয়া, তখন কোনও হেঁড়ে গলায় শোনা যায় এরকম সাইকেল রিক্সায় চলমান বিজ্ঞাপনউত্তর কলকাতায় অলি-গলিতে শোনা গেলেও যেতে পারেতবে খাস কলকাতার বুকে এরকম ডুগডুগি বাজিয়ে ব্যথার মলম বিক্রির দিন বোধহয় শেষ ওখানে ব্যথায় ভোগা’দের জন্য ইয়োগা ( মানে, যোগা) আছে, ডাক্তারের গ্যাঁট গরম করার রেস্ত আছেবাঙালীরা ব্যথা নিয়ে বেশ কাতর, মহিলারা একটু বেশীকি করা যাবে বলুন- ব্যথার নিত্যতা সূত্র অনুযায়ী ব্যথা যদি দিয়ে থাকেন, তবে পেতেও প্রস্তুত থাকুনতাই স্বপ্নাদেশে বা স্বপ্নদোষে প্রাপ্তব্যথা হরণের রকমারি টোটকা হাজির; MY টোটকা, MY চয়েস’মধ্যবিত্তের র‍্যাকে সরু শুভ্র ন্যাড় উদগিরনকারি বোরোলীনের পাশে এখন শোভা পায় VOLINI- “ভোলিনি, তোমায় আমরা ভুলিনি”আচ্ছা, টিভিতে একখান অ্যাড্‌ দিতো না ...আহ্‌ সে আহা তক্‌”কি জানি আমার তো এটা পানুর অ্যাড্‌ মনে হয়‘আহ্‌, আহ্‌ ...’ শীৎকার কিছুক্ষণ চলার পর, ক্যালানে দেড় চামচ কষাটে দই ঢেলে জিভ বার করে ক্লান্ত প্যাতপ্যাতে শিশ্ন আঁকড়ে বলে ‘আহা’এখন খবরের কাগজের প্রথম পাতাতেও থাকে ব্যথার বিজ্ঞাপন, কোনও বুড়ো বুড়ি কোমরে বা হাঁটুতে হাত দিয়ে হেলে দাঁড়িয়ে আছেন, মুখটা দেখলে মনে হয় ‘সকালে পরিষ্কার হয়নি’অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়-এর বোধহয় সব রকম রোগ আছে- কানে শোনার সমস্যা, অর্শ, বাত... উনি বয়স্কদের ব্যথার আইকন যাই হোক, উদ্বোধনী সঙ্গীত অনেকক্ষণ মাড়ানো হল, এবার কাজের কথায় আসিআমি একজনের গল্প শোনাবোভোটার কার্ডে  নাম প্রদীপ, ডাকনাম পদু, ইষ্টনাম চদুআমরা সবাই এই পদুকে চিনিপদু যে কেউ হতে পারে, আমি, আপনি, সলমন খানআমরা কেউ কেউ পুরোপুরি পদু, কেউ বা ভগ্নাংশেপদু ওর ছাগলদরদী কণ্ঠে ছোটবেলা থেকে গাইত “এ ব্যথা কি যে ব্যথা, বোঝে কি ...”এই লেখার শুরু দিকে আমি যে ব্যথাগুলির কথা বলতে চেয়েছি, পদু সেই ব্যথার কথা ভেবে এই গান গাইত নাপদুর গল্প হল মন মলদ্বারের ব্যথারযারা বাংলায় কাঁচা তাদের জানিয়ে রাখি, মলদ্বার মানে শপিং মলের মেটাল ডিটেক্‌টর শোভিত দরজা নয়, যেখানে প্রেমিকার জন্য ওয়েট করতে হয় ফুচকাওয়ালা বা বুড়বুড়ির ফেরিওয়ালাকে পাশে রেখেমলদ্বার, মানে পোঁদ, একটু প্রাজ্ঞ বাগ্মিতায় ‘গাঁড়’ আর ইংরেজিতে বিগ বি’র বৌমার ডাকনাম ‘অ্যাশ’(ass)এই পদু কিন্তু পুরুষ, ওরটা সোজা, বক্র না কি ক্ষুদ্র জানি নাতবে, হিজড়ে, গে, ডবল-ডেকার এসমস্ত আঁতলামো ওর নেইএকটা কথা আগেভাগে জানিয়ে রাখিপদুর গল্প বলছি  মানে আমি কিন্তু, লন্ড বা লিঙ্গের পক্ষপাতিত্ব করছি নাআমি রোগা, ভিতুমেয়েদের বড্ড ভয় করেএখন ন্যাপকিন প্রতিবাদ, মাই চয়েস্‌-মাই চয়েস্‌ এসব করে ওনারা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছেনতাই নারীকে কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে কল্পনা করতে আমার শুকিয়ে যায়আসুন গল্পে ফেরা যাক
পদু জন্মেছিল শ্রীরামপুরে এক মধ্যবিত্ত পরিবারেযৌথ পরিবার, একটা পায়খানায় আটটা শেয়ার, উনুনের আঁচের ধোঁয়া, সতেরো’র নামতা মুখস্থ-য় কোষ্ঠবদ্ধতা এসব নিয়ে তার শৈশব কেটেছিলছোটবেলার একটা সমস্যা হল ব্যথা পেলে বলা যায় নামানে মনের ব্যথার কথা বলছিনুনুতে কাঠপিঁপড়ে কামড়ে দিলে, সাইকেল শিখতে গিয়ে রাস্তায় পড়ে গেলে ইত্যাদি ঘটনায় প্রাপ্ত ব্যথার জন্য নিরুপা রায়-এর মত বাঙালী মা’র সেবা কমল মিত্তির বাপের গোবেরনের মাসকাবারি ছিলছোটবেলায় ব্যথা পেলে কাকে বলবেন? বড় হলে এক পাইট থাকলে জুটে যাবে ব্যথা শেয়ার করার দোস্ত; ফোকটে মিলবে উপদেশপদুর ছোটবেলা বেশ ভালই ছিল খেলাধুলা, পড়াশুনা নিয়েকিন্তু, মাঝেমাঝেই নারদের মত উদয় হত এই ব্যথাপদুর খুব ইচ্ছে ছিল গান, ছবি আঁকা শেখারওর দিদি (জেঠুর মেয়ে) যখন পাশের বাড়ির নবীনা কাকিমার কাছে গান শিখতে যেতো, পদুও সঙ্গে যেতোপদুও দিদির সাথে বেসুরো সারেগামা বলতসে বেচারা জানত না গান শিখতে মাল্লু লাগে, যেটা তার বাপ দেবে নাসেই বাড়ি যাওয়া বন্ধ হল পদুরদিদি আঁকা শিখতে যেতো বিকেলবেলায়, পেল্লাই কাঠবোর্ড, আর্টপেপার নিয়েএকই বাড়িতে দিদিকে এসব শিখতে দেখে পদু চাইত গাইতে, আঁকতেবিস্কুটের কৌটোকে তবলার মত বাজিয়ে হিন্দি গান গাইত, আর মায়ের দেওয়া পাঁচ টাকায় রঙপেন্সিল কিনে যেখানে সাদা পাতা পেতো ছবি আঁকতএকদিন বাবার কাছে মার খেলো, বাবা বলল “এই ভুত প্রেত এঁকে জীবন চলবে? কায়েতের ঘরে পাঁঠা জন্মেছে ...” পদু খুব কেঁদেছিল সেদিনওইদিন বুঝতে পেরেছিল, ওর বুকের ভেতর একটা জিনিস আছে, দেশবন্ধু ক্লাবের ব্যান্ডপার্টির মত ডুম্‌ ডুম্‌ করে বাজে আর  খুব ব্যথা হয়বালিশ ভিজে গিয়েছিলো, জানলার বাইরে যে আকাশ দেখা যেতো সে নরম জোছনা দিয়ে ওর চোখ মুছিয়ে দিয়েছিলকিন্তু, বুকের সেই ব্যথাটা ...
পদু খুব বোকা ছিল, পাড়ার খেলার সাথীরা ছিল ক্লাসিকাল ঢ্যামনাকিছু না করেই চিরকাল ফেঁসে যেতোস্কুলের বন্ধুদের হাতে দেখত চাচা চৌধুরী, টিনটিন-এর বইকিশলয়, দ্রুতপঠন ছাড়া কোনও বই পদুর কপালে জোটেনি, তাই রাস্তাঘাটে কুমার শানুর গান শুনে একটু দুলে নিতোতখন থেকেই সে বুঝতে পারছিল এই চুতিয়া সমাজে নিজের ব্যথার চিকিৎসা নিজেকেই খুঁজে নিতে হবেপুজোয় তার একটার বেশী জামা কখনো হয়নিপাড়ার প্যান্ডেলে বন্ধুরা চারদিন চাররকম জামা পড়ে আসতোসে বেচারা পুরনো নতুন পারমোটেশন করে পোশাক পড়তবন্ধুরা প্যাঁক দিতো, কিরে তোর একটাই জামা হয়েছে; ওদের সংখ্যা হয়তো চারটে পাঁচটাখুব অল্প বাজি কিনে দিতো বাবা কালীপুজোয়ওদের বাড়ির ছাদে যখন বাজিগুলো রোদে দিতো, পাশের তিনতলা বাড়ির রিক খিল্লি করতরিকের বাজির দাম ছিল তিন ডিজিটের, আর পদুর অনেক কষ্টে হাফ্‌ সেঞ্চুরিজীবনটা তার কাছে একটা যন্ত্রণার মাইন-ফিল্ড হয়ে দাঁড়িয়েছিলকত সাবধানে চলবে, এর চেয়ে মরে যাওয়া বেটারপদু মাঝে মাঝে সুইসাইড করার কথা ভাবতকিন্তু, যার নাম পদু, সে পোঁদে ব্যথা না পেয়ে কি করে পটল তুলবে? আসতে আসতে বয়স বাড়ল, জীবনে বেশ কিছু ভালো বন্ধু এলো, ব্যথার কাউন্টার নিতে এগিয়ে এলো অনেক জোড়া আঙ্গুল পদু হিন্দি সিনেমা দেখতে বড় ভালোবাসতওই সিনেমা দেখে ওর খুব শখ নায়িকার মত একজন প্রেমিকা হবে তারওর প্রেমিক বন্ধুদের জিজ্ঞাসা করত, ‘হ্যাঁ রে তোরা যখন প্রেম করিস, গান হয় মাঝে? ড্রেস বদলে বদলে ধেই ধেই করে নাচিস’ বহু প্রেমে পড়েছে সে, কিন্তু কাউকেই বলে উঠতে পারেনিপদুর বেছে বেছে নায়িকার মত সুন্দরী মেয়েদেরই পছন্দ হতযথারীতি, তাদের ধারেকাছে ঘেঁষা ছিল মুশকিলওই একদিন একসাথে ফুচকা খেলো, আর পদু সেই মেয়ের প্রেমে এমন পড়ল যে, তাকে না পেলে, ফুচকার দোকানের তেঁতুল জলের হাঁড়িতে ডুবে মরে যাবেএদিকে ওর সব বন্ধুরা এক এক করে প্রেমের হালখাতা খুলে ফেলেছেখেঁদি-পেঁচি-নুরজাহানজলকামান, প্রত্যেকের মাথায় হাত রাখলেন ভগবান, শুধু পদুর জ্বলিয়া যাচ্ছে পরানমাষ্টার ডিগ্রী করতে ঢুকে পদু, প্রতিজ্ঞা করলো, প্রেম বসাতেই হবেপোষ মানতে, জোহুজুরি করতেও সে প্রস্তুতবহু এক্সপার্ট কমেন্ট, ফেসবুকে একশো শতাংশ ল্যাং-এর অমরনাথ যাত্রা পেরিয়ে, সে পৌঁছাল হস্টেলের জ্ঞানবৃদ্ধ নিউটনদা’র কাছেনিউটন তার তিরিশ বছরের জীবনে একটি ব্যাপারে  সফল, সে প্রেমে বার বার অসফলতিনি অনেক মেয়ের সাথে ঘুরেছেন, কয়েকজনের সাথে শুয়েছেন (বোধহয় গুল), প্রায় সবার পোষ মেনেছেন, এবং যথারীতি ‘সুখারেন সমাপয়েত’ লাথ খেয়েছেনবহু ললনার লাথি সমৃদ্ধ নিতম্ব তার মগজকে যারপরনাই পুষ্ট করে চলেছে, আর বাণীদাতা হিসেবে তিনি একেবারে দুলালের (দুলাল নয়) তালমিছরিপদুকেও তিনি এক প্যাকেট গোল্ডফ্লেক লাইটস্‌-এর বিনিময়ে নিরাশ করলেন নাসব শুনে বললেন, পদু- তুই বাবা  রাজনীতি করএখন লিটিল ম্যাগ্‌, কবিতা, রক্‌ ব্যান্ড এসব চলছে নাছবি তোলার লাইনে হেব্বি রেষারেষিপদু হতাশ হয়ে বলল, কোন দল? লাল, সবুজ, গেরুয়া নাকি (গলার স্বর নামিয়ে) মাও? নিউটন বলল, “আহা দল নয়... হোককলরব”তারপর বিছানার পাশে রাখা গীটারটি নিয়ে হেঁড়ে গলায় গান ধরলেন
“হোক কলরব, ফুলগুলো সব মাকু না হয়ে, টিএমসি হল ক্যান...।।
নিউটন পদুকে বলল “গীটার বাজাতে শিখতে হবেতিনটে  কর্ড D,A,G শিখিয়ে দেবোবেতালা চাঁটি মারবি গিটারেকাজ হয়ে যাবেতোর গান কেউ শুনবে না, কিন্তু ওই রাস্তায় ডুগডুগি বাজিয়ে পাড়ফরমিং আর্ট মাড়াতে হবেখাদির পাঞ্জাবী পরবি, আর কিছু বাতেলা শিখিয়ে দেবোমাঝে মাঝে ঢেঁকুর তোলার মত আওড়াবিবাতকম্ম করেও বলবি, বিস্ফোরণ ঘটলসামনের লক্ষ্মীবারে বিপ্লব আসছে, বিড়ির আগুন বিদ্রোহের আগুণ এসব ফোটাবি...”
টানা দুমাস নিউটনদা’র গরুমিং থুড়ি গ্রুমিং-এর পর কলেজ স্কয়ারে একটা স্ট্রিট কর্নারে পদু হাজির গীটার নিয়েচারিদিকে গিজগিজ করছে মেয়েকালো টিপ, কাঠের গয়না, বুটিক শাড়ী, চোখে কালো ফ্রেমের চশমানাল ফেলা বারণ, তাই বেশ ব্যাক্তিত্ব নিয়ে পদু গীটার নিয়ে শুনিয়ে দিল তিনটে গানঅভিষেক টেস্টে পদু পাঁচটা উইকেট ফেলে দিলোওই পাঁচটির  মধ্যে এক নায়িকার সাথে পদুর প্রেম হয়ে গেলোপ্রেমিকার নাম উপমা কংসবণিক পদুর আনন্দ আর ধরে নানিউটনদাকে পেসাদ হিসেবে দিলো, গোলবাড়ির কষা মাংস আর এক পাইট রয়াল স্ত্যাগউপমার কোলে মাথা রেখে পদু বলত “কি লাগছেআহ্‌, আমি তো ভাবতেই পারছি নাচুলটা আর একটু বড় হলে আমি অমিতাভ আর তোমার লিপস্টিকটা আর একটু ডিপ হলে তুমি রেখা; সিলসিলা উপমা বলত- “ধুর, তোমার খালি সিনেমার কথাতুমি প্লিজ দাড়ি রাখবেরীতমের কি সুন্দর দাড়ি ছিল... রীতম, উপমার প্রাক্তন প্রেমিকগেঁজেল রীতম, প্রতিবাদকে পেট করে দিয়ে অস্ত্রেলিয়ায় সাহেবদের গু চাটছে, আর ফেসবুকের দেওয়ালে সারাক্ষণ “হোক কলরব”-এর ফ্যাদা ফেলে ভরিয়ে রাখেপদু হাফ্‌ মাকুন্দা, ওইরকম দাড়ি হওয়া অসম্ভবব্যথা পেলো বেচারাআবার সে একা হয়ে গেছেব্যথার গপ্পো শোনাবার লোক নেইনিউটনদা বেপাত্তাপ্রেম করে মধ্যবিত্ত পদু সংসার পাতার স্বপ্ন দেখছেগান-গীটার ডকে উঠেছেগীটারে ধুলোর সাম্রাজ্য, আরশোলা-টিকটিকির রোজভ্যালি রিসর্টকয়েকদিন কলরব পার্টির সাথে ওঠা বসা করে দেখল, ওখানে বাঞ্চতের চাষ হয়পদু ঠিক করলো, প্রেম তো হয়েই গেছে আর এসব ভুজুং-এর কি দরকারপদু আর উপমার সুন্দর স্বর্ণালি সন্ধ্যা, এভাবেই চলুক না বাকি জীবনকিন্তু, নিয়তি নামে একটা ব্যাকটিরিয়া কখন আপনাকে চেটে দিয়ে চলে যাবে আপনি জানতেও পারবেন নাঘুম থেকে উঠে হয়তো দেখবেন চোখে জয়বাংলা, বানটুতে ফুস্কুড়ি
Main, Meri Patni Aur Woh... এইটা নিশ্চয় শুনেছেনপ্রেমের সম্পর্কেও এরকম woh’ বা ‘সে’- অস্তিত্ব আছেএই ‘সে’ সূচ হয়ে প্রেমিকের পোঁদ দিয়ে ঢোকে, আর তার শরীর-ব্রেনের সব গুবলেট করে, মাথার উপর দিয়ে তালগাছ হয়ে বেরোয়রক্তিম নামে এক ডাক্তারি ছাত্র উপমার বন্ধু ছিলবন্ধু-ফন্ধু ওসব বালের কথা মশায়আদতে প্রেমিক হবার অ্যাপলিকেশন দিয়ে বসে আছে, কবে প্যানেলে ডাক পাবে তার অপেক্ষায়এই চুদির ভ্রাতারা হল, মেয়েদের জীবনে জেনারেটরের মতযখনই  প্রেমিক load shedding হবে, এই রক্তিমরা আলো দেবেএরা চব্বিশ ঘণ্টা সার্ভিস দেয়উপমার একদিন ষাঁড়ের বিচির রাজনৈতিক গুরুত্ব নিয়ে জানার ইচ্ছে হয়েছেপদু বেচারা নিজের বিচিটাকেই ভালভাবে জেনে উঠতে পারল না, তো ষাঁড়ের বিচি! উপমা খুব দুঃখ পেয়ে রক্তিমকে ফোন করলোরক্তিম চীন, রাশিয়া, ভিয়েতনাম তথা ভারতে ষাঁড়ের বিচির কি রাজনৈতিক গুরুত্ব ব্যাখ্যা করলো ওইদিন পদু সতেরো বার ফোন করেও উপমাকে পায়নি, ... “আপনি যে নম্বরটিতে ফোন করেছেন, সেটি এখন ব্যস্তঅনুগ্রহ করে...”উপমাকে সারপ্রাইস্‌ দিতে, ধর্মতলা থেকে মেড ইন চায়না দুটি ষাঁড়ের বিচি গিফ্‌ট করেছে রক্তিম, তাতে লেখা প্রেমের কবিতা “আমরা দুজন থাকবো চিরকাল, জোড়ায় জোড়ায়, কথা দিলাম হে প্রিয়তমা...”ব্যাপারটা শুনে গা পিত্তি জ্বলে গেলো পদুর, কিন্তু প্রকাশ করা যাবেনা, পাছে সে সন্দেহবাতিক হিসেবে ধরা পড়ে যায়উপমার সাথে প্রেম শুরু হবার সাড়ে আট মাসের মধ্যে সম্পর্কের মিস্‌ক্যারেজউপমা শুরু করলো হাজার ভ্যান্তারাপদু অনেক বোঝাল, কাঁদল, হাগলোউপমা বলল, “আগে তোমায় খুব ভালবাসতামএখন আর কিছু খুঁজে পাইনা”পদু ভাবল এত কষ্ট করে ভালোবেসে এই পরিণামভীষণ ভেঙ্গে পড়লএকটা বছর নষ্ট হয়ে গেলো, শরীরে নানান সমস্যা দেখা দিলোআসতে আসতে মুখের তেতো ভাবটা কাটছিলউপমা মাঝেসাঝে খবর নেয়, বলে সামনের দিনে সব ঠিক হয়ে যেতে পারেপদু আশায় বুক বাঁধে, আনন্দে রাতে দুটো রুটি বেশী খায়এভাবে চলছিলসম্পর্ক ভাঙার পাঁচ মাস বাদের ঘটনাএকদিন পদু একা একা নন্দন গেছে, একটু এদিক ওদিক হেঁটে ঘুরে আসবেবিড়লা তারামণ্ডলের দিকে হাঁটতে গিয়ে দেখে, উপমা আর রক্তিম হাঁটছে; বিনিময় হচ্ছে হাসিথমকে দাঁড়াল পদুসেই ছোটবেলায় বুকে যেমন হত- দেশবন্ধু ক্লাবের ব্যান্ডপার্টির মত ডুম্‌ ডুম্‌ করে বাজত আর খুব ব্যথা হতসেটা শুধু বুকে নয়, পোঁদেও হচ্ছেবুকের ব্যথাটা সয়ে গেছে, কিন্তু এভাবে পোঁদে ব্যথা“একটা বছর নষ্ট, জীবনের কত কিছু হারিয়ে ফেলা... এভাবে আমার পোঁদ মারা গেলো”- পদুর চোখে জল
পদু সিনেমার নায়ক নয়সে বচ্চনের মত ব্যথা ফিরিয়ে দিতে শেখেনিপদু হারিয়ে গেছেসে এখন পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সের প্রদীপ দাশগুপ্তসারাজীবন গাছ আর পশু-পাখি নিয়ে কাটাবে সেমানুষকে সে ঘেন্না করেসে নিজের হাতে কবর দিয়েছে তার ডাকনাম ‘পদু’-কেতার বাড়িতে আছে অনেক রকম কুকুর, পাখি, খরগোশবাড়ির বাগানে হরেক রকম গাছমানসিক ভারসাম্যহীন মাকে নিয়ে থাকে সেমা মাঝেমাঝেই প্রলাপ বকে “গোপাল আমার, এবার বিয়ে কর, বত্রিশ বছর বয়স হল তো...”মায়ের কথা শুনে ওর কাকাতুয়াটিও মিষ্টি মিষ্টি করে বলে “এই গোপাল বিয়ে কর”



আড্ডা, সাবেকী ভাষায় Interview



আমার জীবন থেকে উঠে আসা সুর


এখনো অ্যানাউন্সমেন্ট হয় নাই, আসবে কি না জানা নাই

Comments